জয়নুল-জসীম-আল-মুতী জন্মোৎসব
ফারমিহা আহমেদ শ্রেষ্ঠা
কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম তিন গুণী বিশিষ্ঠজন,শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন,পল্লীকবি জসীম উদ্দীন এবং বিজ্ঞানী ডঃ আব্দুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দিনের স্মরণে কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা প্রতিবছর জন্মবার্ষিকী পালন করে থাকে। জন্মবার্ষিকী দুটি ভাগে উদযাপন করা হয়,প্রথমতো তাদের স্মরণে,চিত্রাংকণ,আবৃতি ও বিজ্ঞান বিষয়ক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। এবং পরের অংশে থাকে পুরষ্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শিল্পচার্য জয়নুল আবেদিন ১৯১৪ সালের ২৯ডিসেম্বর তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহুকুমার (বর্তমানের কিশোরগঞ্জ জেলা) কেন্দুয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। খুব ছোটবেলা থেকেই তিনি ছবি আঁকতে পছন্দ করতেন।
পল্লী কবি জসীম উদ্দীন ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন মোল্লা তার পূর্ণ নাম হলেও তিনি জসীম উদ্দীন নামেই পরিচিত। তার বাবার বাড়ি ছিল একই জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। তিনি একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন।
আব্দুল্লাহ আল-মুতি ১৯৩০ সালের ১ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ জেলার ফুলবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আব্দুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দিন তার নাম হলেও তিনি আব্দুল্লাহ আল-মুতী নামে পরিচিত।
এই তিনজন বরেন্য ব্যক্তির জন্ম মাস এক সাথেই তাই আমরা কচি-কাঁচারা এই তিনজন ব্যক্তির জন্মদিন উপলক্ষে একসঙ্গে জন্মোৎসব পালন করি ,আবৃত্তি,ছবি আঁকা,বিজ্ঞান বিষয়ক ক্ইুজ,রচনা ও বক্তৃতার মাধ্যমে। খুব শীতের সকালে ঘন কুয়াশা অতিক্রম করে চলে আসি,ছবি আঁকার প্রতিযোগিতায় সব বন্ধুদের সাথে একসাথে বসে ছবি আঁকি। আর মজার ব্যাপার হল ছবি জমা দিলেই মেলার পক্ষ থেকেই পেয়ে যাই একটি কমলা,ততোক্ষণে আকাশে উঠে যায় রোদ। আমরা কমলা খাওয়া শুরু করি ,আর হ্যাঁ আমাদের ছবির বিষয় থাকে উন্মুক্ত,তাই আমরা অতি আনন্দের সাথে নিজের কল্পনার ছবি আঁকতে পারি। পরেরদিন শুরু হয় কবি জসীম উদ্দীনের কবিতা। আমরা তিনটি গ্রæপে বিভক্ত হয়ে প্রতিযোগিতা করে থাকি। এরপর বিজ্ঞানী ডঃ আব্দুল্লাহ আল-মুতি শরফুদ্দিনের এর স্মরণে বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ,বক্তৃতা,রচনা,বিজ্ঞান মেলার মাধ্যমে প্রতিযোগিতা শেষ করি।
বাংলাদেশের বিশিষ্ট গুণীজন শিল্পী সাহিত্যিক কবি ও বিশিষ্ঠজনরা এই বিচার কাজ সম্পন্ন করেন। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি প্রতিযোগিতার ফলাফলের জন্য। নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিযোগিতার ফলাফল আমাদের জানানো হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিযোগী বিজয়ীদের পুরষ্কার দেওয়া হয়। পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের বিশিষ্ঠ গুণীজনেরা উপস্থিত থাকেন।
এবার বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা এবারের জয়নুল-জসীম-আল মুতীর ন্মোৎসবের প্রতিযোগিতাটি অনলাইনে আয়োজন করে। প্রতি বারের মতো এবারও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা বিষয়টি উনমুক্ত থাকে,জসীম উদ্দিনের কবিতা ভিডিও করে মেইলে প্রেরণ করে। বিজ্ঞান বিষয়ক প্রতিযোগিতা নির্ধারিত বিষয়ের উপরে ভিডিও করে মেইলে প্রেরণ করে। এই অনলাইন প্রতিযোগিতাতে কয়েক হাজার প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। ভবিষ্যতে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি।
0 Comments