আল্পনা চৌধুরী
পানির অপর নাম জীবন আবার এই পানিতে ডুবে গেলে মানুষ মারাও যেতে পারে। পানিতে ডুবলে মানুষের নিশ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। মানুষ জ্ঞান হারাতে পারে এমনকি মারাও যেতে পারে, আমাদের দেশে প্রতি বছর প্রায় সতের হাজার (১৭০০০) শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় এর মধ্যে বার হাজার (১২০০) শিশু হলো ১-৪ বছর বয়সী। অর্থাৎ প্রতিদিন পানিতে ডুবে মারা যায় ৪৬ জনেরও বেশী শিশু। তাই পানিতে ডুবে যাওয়ার ঝুকি এড়াতে সাবধান থাকতে হবে। অন্যদের ও সাবধান করতে হবে।
১. বিপদ হতে পারে ঃ
ডোবার পানিতে পড়ে গেলে
সাঁতার না জেনে পানিতে নামলে
একা একা পানিতে গোসল করলে
নদী বা পুকুরে একা একা সাঁতার কাটলে
ডোবায় পড়ে যাওয়া কোন কিছু তুলতে গেলে
খাড়া পুকুর পাড় বা ডোবার ধারে শিশুরা খেলতে গেলে
একা একা সাঁকো বা পুল পাড় হওয়ার সময় পা পিছলে গেলে
নৌকা নিয়ে একা একা কোন নদী বা বিলে গেলে
বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে নিজে অসাবধান হলে
বন্যার সময় পানিতে ডুবে গেলে
২. পানিতে পড়ে গেলে কী করতে হবে?
চিৎকার করে আশে পাশের লোকজনকে ডাকতে হবে।
সাঁতার জানা থাকলে সাঁতার কেটে ভেসে থাকার চেষ্টা করা।
হাতের কাছে ভেসে থাকার কোন জিনিষ পেলে তা ধরে ভেসে থাকার চেষ্টা করা।
সাহায্যের জন্য কেউ লাঠি এগিয়ে দিলে বা দড়ি ছুঁড়ে দিলে তা ধরার চেষ্টা করা।
৩. কেউ পানিতে পড়ে গেলে কী করবো :
চিৎকার দিয়ে আশে পাশের লোকজনকে ডাকবো।
পানি থেকে তুলতে কখনই নিজে পানিতে নামবো না
পানিতে ভাসে এমন কিছু হাতের কাছে পেলে ছুড়ে দেব, যাতে সে ওটা ধরে ভেসে থাকতে পারে।
শুয়ে পড়ে হাতের কাছের লাঠি বা দড়ি ডুবে যাওয়া বন্ধুর দিকে ধরব।
পানিতে পড়ে যাওয়া বন্ধুকে সাহস যোগাবো।
পানি থেকে তুলে তাড়াতাড়ী প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে এজন্যে বড়দের সাহায্য নেব।
৪. প্রাথমিক চিকিৎসা ঃ
পানিতে ডুবা রোগীর চিকিৎসায় প্রথমেই কিছু বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে,
ব্যক্তি কতক্ষন পর্যন্ত পানিতে ডুবে ছিল
ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়েছে কিনা
শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে কিনা
ব্যক্তির জ্ঞান আছে কিনা তা পরীক্ষার জন্য :-
প্রথমেই দেখতে হবে, ব্যক্তি ডাকলে সাড়া দিচ্ছে কিনা। যদি সে কথা শুনছে মনে হয় তাহলে তাকে হাতের ও পায়ের আঙ্গুল নাড়াতে বলতে হবে।
ব্যক্তির নাকের কাছে হাত নিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে হবে ব্যক্তি শ্বাস নিতে পারছে কিনা।
যদি শ্বাস নিতে না পারে তাহলে বুঝতে হবে তার গলা বা শ্বাস নালীর মধ্যে কিছু আটকে গেছে অথবা শ্বাস তন্ত্র কাজ করছে না। এ ক্ষেত্রে----
প্রথমেই ব্যক্তিকে চিৎকরে শুইয়ে দিতে হবে।
ব্যক্তির মুখের চোয়াল দুপাশ থেকে শক্ত করে ধরে মুখ গহবর খুলতে হবে। এরপর শ্বাসনালী খুলে দেবার জন্য ব্যক্তির মাথাটিকে কাত করে তোমার দুটো আঙ্গুল পরিস্কার কাপড়ে পেঁচিয়ে ব্যক্তির মুখে গহবরে কিছু থাকলে তা বের করতে হবে।
এরপরও যদি ব্যক্তির শ্বাস প্রশ্বাস চালু না হয় তবে সি.পি আর(ঈ.চ.জ) পদ্ধতির মাধ্যমে তার শ্বাস প্রশ্বাস ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া চালু করার চেষ্টা করতে হবে।
৫. সি.পি.আর (কার্ডিও পালমোনারী রিসাসিটেশন) এর ধাপ সমুহঃ
প্রথমেই ব্যক্তির মুখ খুলে তাতে তোমার মুখ ভালভাবে লাগিয়ে বাতাস প্রবেশ করানোর জন্য ফুঁ দাও। অবশ্যই তখন ব্যক্তির নাক টিপে ধরে রাখতে হবে, যেন প্রবেশ করানো বাতাস নাক দিয়ে বের হয়ে না যায়। শুধু তাই নয, ব্যক্তির থুতনিটি একটু ওপরের দিকে ঠেলে ধরতে হবে যেন শ্বাসনালীটি পরিস্কার ভাবে খোলা থাকে। তবে একাজটি করার জন্য তোমাকে বারবার চর্চার মাধ্যমে কাজটি আয়ত্ব করে এতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
তারপরও যদি ব্যক্তির শ্বাস প্রশ্বাস চালু না হয় তবে তার বুকে চাপ দিয়ে কার্ডিয়াক ম্যাসেজের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া চালু করার চেষ্টা করতে হবে। এজন্যে ব্যক্তির বুকের মধ্যরেখার একটু বামদিকে তোমার বাম হাতের তালুর ওপর ডান হাতের তালু রেখে চাপ দিতে হবে। এভাবে সেকেন্ডে ১বারের বেশী চাপ দিতে হবে। প্রতি ১৫ বার কার্ডিয়াক ম্যাসেজের পরে (অর্থাৎ প্রায় ১০ সেকেণ্ডের পর) ২ (দুই) বার মুখে মুখ লাগিয়ে ব্যক্তির মুখে ফুঁ দিয়ে ফুসফুসে বাতাস ঢুকাতে হবে। এরমধ্যে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে ডাক্তারের কাছে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
পুড়ে যাওয়া
শিশুদের আহত হওয়ার আরেকটি অন্যতম ঘটনা হচ্ছে পুড়ে যাওয়া নিরাপদ পরিবেশের অভাবে বিশ্বের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু এ ধরণের ইনজুরিতে মারা যায় বা পঙ্গুত্ববরণ করে। বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লক্ষ শিশু পুড়ে গিয়ে ইনজুরির শিকার হয়। আমরা যদি দূর্ঘটনার প্রকৃতি বিশ্লেষন করি তাহলে দেখতে পাব বিপুল সংখ্যক দূর্ঘটনা পারিবারিক পরিমন্ডলে ঘটে। এসব দুর্ঘটনা বিভিন্ন ধরণের সতর্কতা অবলম্বন করলে এবং শিশুকে সে অনুযায়ী শিক্ষা দিলে অতি সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
যে সব কারণে পুড়ে যেতে পারে:-
চুলার কাছে খেলতে গিয়ে
গরম ছাইয়ে পা দিয়ে
আতশবাজি পুড়াতে গিয়ে
আগুন নিয়ে খেলতে গিয়ে
কুপি থেকে গায়ে আগুন লেগে
গরম জিনিষ ধরলে
আগুন জ্বালাতে গিয়ে
রান্না করার সময় গরম তেলের ছিটা পড়লে
গরম ডাল বা ভাতের মাড় গায়ে পড়লে
জলন্ত দিয়াশলাইয়ের কাঠি এখানে সেখানে ফেললে তা থেকে আগুন লেগে
পুড়ে যাওয়া রোধ কী করব :
কখনও আগুন নিয়ে খেলবো না।
কুপি বাতি ব্যবহার করবো না
গায়ে বা কাপড়ে আগুন লাগলে কী করতে হবে:-
একদম দৌড়ানো যাবে না
সাথে সাথে মেঝেতে শুয়ে পড়তে হবে। আগুন নিভে না যাওয়া পর্যন্ত দুই হাতে মুখ চেপে মেঝেতে শুয়ে গড়াগড়ি করতে হবে।
কাপড়ে আগুন লাগলে থামবো (ঝঃড়ঢ়), শুয়ে থাকবো (উৎড়ঢ়), এবং গড়াব (জড়ষষ) এ নীতি অনুসরণ করতে হবে।
যদি অন্য কারো গায়ে আগুন লাগে তবে আশেপাশে যে থাকবে সে একটি মোটা কাঁথা, বস্তা, কম্বল বা লেপ দিয়ে জড়িয়ে দিলে আগুন নিভে যাবে।
পুড়ে গেলে কী করতে হবে:-
পুড়ে যাওয়া জায়গায় একাধারে ১০ মিনিট ঠান্ডা পানি ঢালব তবে বরফ বা খুব ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা যাবে না।
সাথে সাথে বাবা মা বা বড় কাউকে জানাব
পোড়া জায়গা পরিস্কার কাপড়ে ঢেকে রাখব
তেল জাতীয় জিনিষ দেয়া যাবে না
ফোলা জায়গা খুচিয়ে চামড়া ফাটানো যাবে না
আ্যাসিড বা অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্যে কখনও শারীরের কোন অংশ পুড়ে গেলে এমনভাবে পানি ঢালতে হবে যেন সেই গড়ানো পানি শরীরের অন্য অংশে না পড়ে। আধাঘন্টা বা তারচেয়ে বেশী সময় ধরে পানি ঢালতে হবে।
কেটে যাওয়া
ধারালো জিনিস থেকে সাবধান থাকতে হবে, ধারালো জিনিস দিয়ে খেলা যাবে না। কারণ দা, বঁটি ছুড়ি, ব্লেড, কুডাল, কোদাল, কাঁচি ভাঙ্গা টিন, ভাঙ্গা কাঁচ এগুলো দিয়ে অসাবধনতাবশত বা কাটতে গিয়ে কেটে যেতে পারে। সঠিক চিকিৎসার অভাবে কেটে যাওয়ার পরিনতি অনেক মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
সাবধানতা :
ধারালো জিনিস থেকে দূরে থাকব ধারালো জিনিস ধরব না। দা, বটি, ছুরি, কোদাল, শাবল, লাঙল, নিড়ানী এগুলো দিয়ে কেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে তাই সাবধান থাকতে হবে। কাঁচ শামুক, ঝিনুক, লোহার টুকরা ইত্যাদি দিয়েও কেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে তাই সেগুলো থেকে দুরে থাকতে হবে।
শিশুদের চোখে চোখে রাখতে হবে।
ধারালো যন্ত্রপাতি নিরাপদ জায়গায় গুছিয়ে রাখতে হবে।
কেটে গেলে কী করতে হবে :
প্রথমেই কাটা জায়গা অন্তত ১০ মিনিট শক্ত করে চেপে ধরতে হবে। এতে রক্ত পড়া কমে যাবে বা বন্ধ হয়ে যাবে।
এরপর পরিস্কার পানি ও সাবান দিয়ে কাটা জায়গা ভালোমতো ধুয়ে দিতে হবে।
বেশী কেটে গেলে কাটা স্থান শক্ত হাতে চেপে ধরে রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
হাত বা পা কেটে গেলে হাত বা পা একটু উঁচু করে ধরতে হবে, এতে ক্ষতস্থানে রক্তপ্রবাহ কমে যায় ফলে রক্ত পড়া বন্ধ হয়।
সাপে কাটা
বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২৬০০ জন শিশু প্রাণীর কামড়ে মৃত্যুবরণ করছে। এদের সবাই জলাতঙ্ক রোগের বহনকারী কুকুর বা বিষাক্ত সাপের কামড়ের শিকার। আরো ৫৯০০০ শিশু প্রাণী দ্বারা আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন মাত্রায় ইনজুরিগ্রস্থ হয়। যা আমাদের জন্য বেশ চিন্তার বিষয়।
সাধারণত গ্রীস্ম ও বর্ষাকালে সাপের উপদ্রব বেশী হয়। শহরাঞ্চলে সাপে কাটার ঘটনা তেমন না ঘটলেও গ্রামাঞ্চলে এ ঘটনা মাঝে মধ্যে ঘটে। প্রতিবছর গ্রামঞ্চলে অনেক শিশু সাপের কামড়ে মারা যায়। তবে যে কোন সাপের কামড়েই মানুষ মারা যায় না। যে সব সাপের দাঁতে বিষ রয়েছে তাদের কামড়ে মানুষ মারা যায়, এ জাতীয় সাপকে বিষধর সাপ বলে। বাংলাদেশে দু’ধরণের বিষধর সাপ দেখা যায়-- গোখরা ও কেউটে।
বিষধর সাপের কামড়ের ক্ষেত্রে সঠিক সময় সঠিক চিকিৎসা প্রয়োজন। তবে সাপের কামড়ের প্রতিষেধক ইনজেকশন এবং ঔষধ সহজলভ্য নয়। ফলে বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যুর হার অনেক বেশী।
সাপের কাটা প্রতিরোধ :
যে সমস্ত ঝোপঝাড় আর জলাশয়ে সাপ থাকতে পারে সে সব জায়গায় যাওয়া যাবে না।
অন্ধকার জায়গায় রাখা কোন পাত্রে হাত দেব না।
ইঁদুরের বা অন্য কোন গর্তে হাত দেব না।
রাতে আলো ছাড়া চলব না।
সাপ দেখলেই হাঁটা বন্ধ করে দ্রুত পেছন দিকে সরে যাব।
প্রতিরোধের উপায় :
ঘর এবং বাড়ির চারপাশে ঝোপঝাড় পরিস্কার করা
ইঁদুর ও অন্যান্য গর্ত ভরাট করা
রাতে পথ চলতে আলো ও লাঠি ব্যবহার করা
রান্নার চুলা, গৃহপালিত পশুপাখির বাসস্থান, জ্বালানি কাঠ, খাদ্য মজুদের স্থানে, কাঁথা বালিশ ইত্যাদি ব্যবহারের পূর্বে নিরাপদ দূরে থেকে প্রথমে হাতে তালি দিয়ে শব্দ করা এবং লাঠি দিয়ে নাড়াচড়া করা এতে সাপ থাকলে তা জানা যাবে।
বর্ষা বা বন্যার সময় ঘরের মেঝেতে না শুয়ে কোন উচু স্থানে থাকা এবং মশাড়ি ব্যবহার করা
সাপে কাটার প্রাথমিক চিকিৎসা :
বিষধর সাপে কামড়ালে ও দ্রুত চিকিৎসা দিয়ে রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব। সাপে কাটা রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য যা যা করণীয় তা বর্ণনা করা হলো---------
সর্ব প্রথম কাজ হবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে উপদ্রুত এলাকা থেকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া এবং সাথে সাথে নিজেকেও নিরাপদ রাখতে হবে।
শরীরের কোন জায়গায় কামড় দিয়েছে তা দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে। মনে রাখতে হবে, যদি হাঁটা অবস্থায় কামড়ের শিকার হয় তবে সাধারণত ধরে নেয়া যায় সাপ হাঁটুর নিচে পায়ের কোথাও কামড় দিয়েছে। তবে ঘুমন্ত মানুষের শরীরের যে কোন জায়গায় সাপে কামড় দিতে পারে। তাই ক্ষতস্থান সাথে সাথে চিহ্নিত করা খুবই জরুরী।
ক্ষত স্থানে যদি গভীর দাঁতের চিহ্ন দেখা যায় তবে বুঝতে হবে সাপটি বিষধর, বিষধর সাপ যে স্থানে কামড় দিয়েছে তার কিছুটা ওপরে একটি এবং তা থেকে আর একটু ওপরে একটি এভাবে দড়ি/ কাপড় ইত্যাদি দিয়ে শক্ত করে পরপর দুটি বাঁধন দিতে হবে। এতে সহজে সাপের বিষ রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরের ছড়িয়ে পড়তে পারবে না। আক্রান্ত অঙ্গটি যতদুর সম্ভব নাড়া চাড়া না করাই উচিৎ।
প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার সাথে সাথে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে। কোনভাবেই ওঝা, ফকির বা সাপুড়েদের কাছে নেয়া যাবে না।
লক্ষ্য রাখতে হবে রোগী যাতে ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে না ফেলে তাই তাকে সাহস যোগাতে হবে।
অযাচিত মন্তব্য করে রোগীকে ভয় দেখানো ঠিক না।
কুসংস্কারাচ্ছন্ন কোন পদক্ষেপ কেউ নিতে চাইলে তাতে বাঁধা দিতে হবে
মনে রাখতে হবে কুসংস্কারের প্রভাব ও সাপে কাটারভুল চিকিৎসার কারণে আমাদের দেশের অনেক মানুষ প্রাণ হারায়।
0 Comments