১। নামকরণ ঃ
এই সংগঠনের নাম ঃ “কচি-কাঁচার মেলা”
২। কার্যালয় ঃ
কচি-কাঁচার মেলার কার্যালয় ৩৭/এ সেগুনবাগিচা (কাজী মোতাহার হোসেন রোড), ঢাকা-১০০০ এই ঠিকানায় অবস্থিত। এই কার্যালয় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে পরিগণিত; এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থিত মূল সংগঠনটি “কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা” নামে পরিচিত।
৩। আদর্শ ও উদ্দেশ্য ঃ
সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সমাজসেবামূলক একটি শিশু-কিশোর সংগঠন হিসেবে কচি-কাঁচার মেলা নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্য সাধনে পরিচালিত হবে ঃ
ক) সাহিত্য, শিল্প-সংস্কৃতি, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, খেলাধুলা এবং শিক্ষা-সমাজ উন্নয়নের প্রতি শিশু-কিশোরদের আগ্রহ সৃষ্টি করা;
খ) উপযুক্ত ক্ষেত্রসমূহে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণ ও চর্চার সুযোগ সৃষ্টি করা এবং উৎসাহ প্রদান;
গ) শিশু-কিশোরদের প্রবণতা চিহ্নিত করে তদনুযায়ী তাদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ সাধনে সহায়তা প্রদান;
ঘ) শিশু-কিশোরদের শারীরিক গঠন ও মানসিক উৎকর্ষ অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করা;
ঙ) সত্য, ন্যায় ও সুন্দরের সাথে পরিচিত করে শিশু-কিশোরদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা;
চ) মাতৃভূমি এবং মাতৃভাষার প্রতি আগ্রহ ও ভালবাসা সৃষ্টির মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের মধ্যে দেশাত্মবোধ ও আত্ম-সম্মানবোধ জাগরিত করা;
ছ) সমাজ ও মানুষের সাথে একাত্মতা সৃষ্টি, সমাজসেবার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি এবং দুঃস্থ মানবতার সেবায় উদ্ধুদ্ধ করা;
জ) অন্যায়, অশিক্ষা, কুসংস্কার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের মধ্যে মুক্তচিন্তার বিকাশ ঘটানো;
ঝ) নিজস্ব সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পৃক্ততার মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের বিজাতীয় সংস্কৃতি ও অপসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে মুক্ত রাখা;
৪। কর্মসূচি ঃ
বর্ণিত আদর্শ বাস্তবায়ন ও উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য যথোপযুক্ত কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। প্রধানত পাঁচটি ক্ষেত্রে কর্মসূচি গৃহীত হবে। ক্ষেত্র পাঁচটি হবে ঃ (ক) সাহিত্য (খ) শিল্প-সংস্কৃতি (গ) বিজ্ঞান-প্রযুক্তি (ঘ) খেলাধুলা এবং (ঙ) শিক্ষা-সমাজ উন্নয়ন। এসব ক্ষেত্রে কি ধরণের কর্মসূচি গৃহীত হতে পারে তার একটি নির্দেশক (ওহফরপধঃরাব) কর্মতালিকা নিম্নরূপ ঃ
ক) সাহিত্য ঃ শিশু-কিশোরদের কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প প্রভৃতি লেখা, পাঠ ও পর্যালোচনা, শিশুদের জন্য রচিত লেখা পাঠ, দেয়াল পত্রিকা ও পত্র-পত্রিকা প্রকাশ, রচনা শিক্ষা, পাঠাগার স্থাপন ও পরিচালনা ইত্যাদি।
খ) শিল্প-সংস্কৃতি ঃ ছবি-আঁকা, সংগীত, নৃত্য ও নাট্য শিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনা, বিচিত্রানুষ্ঠান, ছোটদের নাটক মঞ্চায়ন, জাতীয় ও সাংস্কৃতিক মনীষীদের স্মৃতিবার্ষিকী পালন, বিশেষ বিশেষ দিবস উদযাপন, ছবি আঁকা, নৃত্য, সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন, চিত্রকলা ও কারু-শিল্প প্রদর্শনী, আবৃত্তি, বক্তৃতা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।
গ) বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ঃ বিজ্ঞান কর্মশালা স্থাপন, বিজ্ঞানের সহজ বিষয়গুলোকে ছোটদের খেলার বিষয়ে রূপান্তর, বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা সভা, ছোটদের উপযোগী কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি প্রণয়ন ও পরিচালনা, ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের আবিস্কার প্রদর্শনী ও উৎসাহ প্রদান প্রভৃতি।
ঘ) খেলাধুলা ঃ শরীরচর্চা, খেলাধুলাÑ বিশেষভাবে দেশীয় খেলাধুলার প্রশিক্ষণ ও পরিচালনা, খেলাধুলা প্রতিযোগিতার আয়োজন ও অংশগ্রহণ প্রভৃতি।
ঙ) শিক্ষা-সমাজ উন্নয়ন ঃ নৈশ বিদ্যালয় পরিচালনা, স্বাক্ষরতার কর্মসূচী গ্রহণ, দরিদ্র শিশু-কিশোরদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা, ছোটদের ফাষ্ট এইড প্রশিক্ষণ, শাক-সবজি, ফুল ও ফলমূলের বাগান তৈরীতে উৎসাহ দান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাহায্য ও সেবা প্রদান, সমাজসেবা বিষয়ে ছোটদের প্রশিক্ষণ প্রদান, পরিবেশ সচেতনতা, শিশু অধিকার, বনভোজন, প্রসিদ্ধ স্থান পরিদর্শন প্রভৃতি।
৫। সদস্য পদ ঃ
৫.১ ঃ তিন ধরণের সদস্যপদ থাকবে ঃ
(ক) শিশু সদস্য (কর্মী)
(খ) তরুন সদস্য (সহযোগী)
(গ) প্রবীন সদস্য (উপদেষ্টা)
ব্যাখ্যা ঃ শিশু-সদস্যরা হবে মেলার কর্মী, কর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে তারা শিখবে। তরুন সদস্যরা পরিবারের বড় ভাইবোনদের মত। তারা কর্মী ভাইবোনদের কাজ শেখাবে। প্রবীন সদস্যগণ পরিবারের পিতা-মাতা বা অভিভাবকের মত, শিশু-তরুন সকল সদস্যদের উপদেশ উৎসাহ দিয়ে গড়ে তুলবেন এবং নিজেরা অনুকরণীয় ‘রোল মডেল’ হবেন।
৫.২ সদস্যপদের যোগ্যতা ঃ
(ক) শিশু সদস্য (কর্মী) :
১. বয়স ১৮ বছরের বেশী হবে না;
২. মেলার আদর্শে বিশ্বাসী ও কর্মকান্ডে অংশগ্রহণে আগ্রহী হতে হবে;
৩. অভিভাবকের সম্মতি থাকতে হবে;
৪. মেলার শিশু পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের সদস্য হবে।
(খ) তরুন সদস্য (সহযোগী)
১। বয়স ১৮ বছরের বেশী হতে হবে;
২। মেলার প্রাক্তন শিশুসদস্য/কর্মী/অংশগ্রহণকারী হতে হবে; অথবা মেলার পাঁচটি প্রধান কর্মক্ষেত্রের অন্তত একটি ক্ষেত্রে পারদর্শিতা থাকতে হবে;
৩। সৎ-চরিত্রের অধিকারী হতে হবে;
৪। সক্রিয় রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকবে না;
৫। মেলার তরুন পরিষদ এবং সাধারণ পরিষদে সদস্য হবার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে।
(গ) প্রবীন সদস্য (উপদেষ্টা)
১) কেন্দ্রীয় মেলার জন্য জাতীয় পর্যায়ে এবং শাখামেলার জন্য স্থানীয় পর্যায়ে এক বা একাধিক অঙ্গনে বিশেষ অবদান বিবেচিত হবে;
২) বয়স সাধারণত: পঞ্চাশ বছর বা তদুর্ধ হবে;
৩) সক্রিয় রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকবেন না;
৪) উচ্চ-নৈতিকতার জন্য সুপরিচিত হবেন এবং অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হবেন;
৫) শিশু-কিশোরদের মেধা বিকাশে এবং কর্মকান্ড পরিচালনায় আগ্রহী হতে হবে;
৬) মেলার প্রবীন পরিষদ এবং সাধারণ পরিষদের সদস্য হবার যোগ্য হবেন।
৭) কার্যনির্বাহী পরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে আজীবন সদস্য হতে পারবেন।
৫.৩ শুভার্থীঃ
মেলা একটি শুভার্থী-তালিকা সংরক্ষণ করবে। মেলাকে অর্থ, সম্পদ, সামগ্রী, শ্রম এবং সক্রিয় সহযোগিতা দিয়ে সাহায্য করেছেন, এমন ব্যক্তিকে শুভার্থী আখ্যায়িত করা হবে। “শুভার্থী ”মেলার সদস্য নন। তিনি মেলার শুভানুধ্যায়ী। শুভার্থী হতে আবেদন করার প্রয়োজন নেই, ভর্তি ফি লাগবে না, নিয়মিত চাঁদাও থাকবে না। শুভার্থী তার সুবিধামত ও ইচ্ছানুযায়ী মেলাকে অর্থ বা অন্যান্য সাহায্য প্রদান করবেন। কার্যনির্বাহী পরিষদ শুভার্থী মনোনীত করবে এবং শুভার্থী তালিকা প্রণয়ন,পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন ও বিয়োজন করবে। অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে কার্যনির্বাহী পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে শুভার্থীদের মধ্য থেকে এক বা একাধিক শুভার্থীকে “পৃষ্ঠপোষক” মনোনীত করতে পারবে।
৬। সদস্য পদ অনুমোদন ঃ
ক) সদস্য পদ লাভের জন্য মেলার পরিচালকের নিকট আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রে পরিচয়দানকারী হিসেবে একজন সদস্যের (প্রবীন/তরুন/শিশু) প্রতিস্বাক্ষর থাকতে হবে। কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় উপস্থিত সদস্যের ন্যুনতম দুই-তৃতীয়াংশের সম্মতিতে সদস্যপদ অনুমোদিত হবে।
খ) সকল ধরণের নতুন সদস্যপদ লাভের জন্য প্রবেশ ফি এবং সদস্যচাঁদার হার নির্ধারণ ও পরিবর্তন করার ক্ষমতা কার্যনির্বাহী পরিষদের উপর অর্পিত থাকবে। বিশেষ বিবেচনায়, প্রবেশ ফি এবং/ অথবা সদস্যচাঁদা প্রদান করা থেকে অব্যাহতি প্রদানের ক্ষমতা কার্যনির্বাহী পরিষদের কাছে ন্যস্ত থাকবে। পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করবে।
গ) বছরের যে কোন সময় চলতি পঞ্জিকা (ঈধষবহফধৎ) বছরের চাঁদা প্রদান পূর্বক সদস্য হতে হবে। সদস্যচাঁদা পঞ্জিকা বছর হিসাবে প্রদেয়। একাধিক বছরের সদস্য-চাঁদা অগ্রিম দেয়া যাবে।
ঘ) নতুন সদস্যগণ প্রবেশ ফি ও সদস্যচাঁদা একসাথে প্রদান করবেন।
৭। সদস্যপদ বাতিল/ স্থগিত/ পূনর্বহাল ঃ
ক. কোন সদস্য পরিচালকের নিকট লিখিতভাবে পদত্যাগপত্র পেশ করলে এবং কার্যনির্বাহী পরিষদ কর্তৃক তা গৃহীত হলে, তাঁর সদস্যপদ বাতিল হবে।
খ. বার্ষিক সদস্য চাঁদা প্রত্যেক বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রদেয়। তিন বা ততোধিক বার্ষিক চাঁদা খেলাপী হলে সদস্যপদ স্থগিত বা বাতিলের বিষয়ে কার্যনির্বাহী পরিষদ সাধারণ ভোটাধিক্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। বকেয়া চাঁদা পরিশোধ করলে, পরিষদ অনিয়ম মার্জনা করতে পারবে। বকেয়া চাঁদা মওকুফ করার ক্ষমতা ও নির্বাহী পরিষদের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
গ. কোন সদস্য মেলার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, স্বার্থ বা সুনামের পরিপন্থি কোন কিছুতে জড়িত হলে, কার্যনির্বাহী পরিষদ দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে তাঁর সদস্যপদ বাতিল করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে পূনর্বহালের আবেদন বিবেচনা, গ্রহণ বা বাতিল করার ক্ষমতা সাধারণ পরিষদ সংরক্ষণ করে।
৮। সাধারণ পরিষদ ঃ
ক) গঠন : সাধারণ পরিষদই এই সংগঠনের সর্Ÿোচ্চ পরিষদ। সকল বৈধ শিশু সদস্য (কর্মী), তরুন সদস্য (সহযোগী) এবং প্রবীন সদস্য (উপদেষ্টা) সমন্বয়ে সাধারণ পরিষদ গঠিত হবে।
খ) বার্ষিক সাধারণ সভা : প্রতি বছর একবার সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ সভার জন্য নূন্যপক্ষে পনেরদিন পূর্বে সভার নোটিশ প্রদান করতে হবে এবং মেলার কার্যালয়ের প্রকাশ্যস্থানে নোটিশ প্রদর্শন করতে হবে। সভা অনুষ্ঠানের তারিখের পূর্ববর্তী ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত পঞ্জিকা বছরের সদস্য চাঁদা পরিশাধ করেছেন, এমন বৈধ সদস্যদের তালিকা সংগঠনের কার্যালয়ে প্রস্তুত রাখতে হবে। চাঁদা খেলাপীদের ভোটাধিকার স্থগিত থাকবে।
গ) বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যাবলী ঃ বার্ষিক সাধারণ সভায় সাধারণ পরিষদ মেলার বার্ষিক প্রতিবেদন ও বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব বিবেচনা ও অনুমোদন করবে এবং মেলার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা তথা সার্বিক দিক নির্দেশনা প্রদান করবে।
ঘ) বিশেষ সাধারণ সভা ঃ অপ্রত্যাশিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বা বিশেষ প্রয়োজনে বছরের যে কোন সময়ে বিশেষ সাধারণ সভা আহবান করা যাবে। মেলার পরিচালক, যুগ্ম-পরিচালক অথবা সংগঠক বিশেষ সাধারণ সভা এক সপ্তাহের নোটিশে ডাকতে পারবেন। এই সভায় সাধারণত পূর্ব নির্ধারিত আলোচ্যসূচি মোতাবেক আলোচনা হবে। তবে উপস্থিত কোন সদস্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ন বিষয় উত্থাপন করলে সভার সভাপতির সম্মতিক্রমে তা আলোচনার জন্য গৃহীত হতে পারে।
ঙ) সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব : বার্ষিক ও বিশেষ সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করবেন মেলার পরিচালক বা তার অনুপস্থিতিতে একজন যুগ্মপরিচালক। কোন যুগ্ম-পরিচালক উপস্থিত না থাকলে, উপস্থিত সদস্যগণ সভার সভাপতি নির্ধারণ করবেন।
চ) সাধারণ সভার কোরাম ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতি ঃ বৈধ সদস্য সংখ্যার এক চতুর্থাংশ উপস্থিত থাকলেই সাধারণ সভার কোরাম হবে। মুলতবি সভার জন্য কোরাম প্রয়োজন হবে না। উপস্থিত সদস্যদের সাধারণ সংখ্যাধিক্য মতকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতি হিসাবে গন্য করা হবে। সংখ্যাধিক্য মত নির্ণয়ের দায়িত্ব সভার সভাপতির উপর ন্যস্ত থাকবে।
৯। কার্যনির্বাহী পরিষদ ঃ
ক. গঠন ও মেয়াদ ঃ মেলার কার্যাবলী পরিচালনার দায়িত্ব ন্যস্ত থাকবে কার্র্যনির্বাহী পরিষদের উপর। কার্র্যনির্বাহী পরিষদ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক দুই বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হবে। সাধারণ পরিষদের এক বছর অন্তর অন্তর বার্ষিক সাধারণ সভায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। কোন কারণে সময়মত নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে বা নির্বাচন বিঘিœত হলে, চলতি (বীরংঃরহম) কার্র্যনির্বাহী পরিষদ পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে।
খ. কাঠামো : শিশু সদস্যদের (কর্মী) মধ্য থেকে পনেরজন সদস্য নিয়ে শিশু-পরিষদ, তরুন সদস্যদের (সহযোগী) মধ্য থেকে পনের জন সদস্য নিয়ে তরুন পরিষদ এবং প্রবীন সদস্যদের (উপদেষ্টা) মধ্য থেকে পনের জন সদস্য নিয়ে প্রবীন পরিষদ গঠিত হবে। এই তিন পরিষদের পঁয়তাল্লিশ জন সদস্য নিয়ে কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠিত হবে। শিশু পরিষদে একজন আহ্বায়ক এবং একাধিক যুগ্ম আহ্বায়ক থাকবে। তরুন পরিষদে একজন সংগঠক এবং একাধিক যুগ্ম সংগঠক থাকবেন। প্রবীন পরিষদে একজন পরিচালক এবং পাঁচজন যুগ্ম পরিচালক থাকবেন। প্রবীন সদস্যদের মধ্য থেকে একজন কোষাধ্যক্ষ এবং একজন বা প্রয়োজনে একাধিক যুগ্ম-কোষাধ্যক্ষ থাকবেন। একজন প্রবীন সদস্য দপ্তর উপদেষ্টা, একজন তরুন সদস্য দপ্তর সহযোগী এবং একজন শিশু সদস্য দপ্তর কর্মী থাকবেন। নির্বাহী পরিষদের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যেও প্রয়োজনে দায়িত্ব বন্টন করা যাবে। দায়িত্ব বন্টনের ক্ষমতা নির্বাহী পরিষদের। আহবায়ক শিশু পরিষদের সমন্বয়ক। সংগঠক তরুন পরিষদের সমন্বয়ক। পরিচালক প্রবীন পরিষদ এবং কার্যনির্বাহী পরিষদের সমন্বয়ক। যুগ্ম-পরিচালক বৃন্দ কার্যনির্বাহী পরিষদের যুগ্ম সমন্বয়ক। পরিচালক এবং যুগ্ম-পরিচালক সংগঠনের সভাপতি এবং সহ-সভাপতি হিসেবে বিবেচিত হবেন। মেলার অভ্যন্তরিন কর্ম পরিচালনায় তাঁরা পরিচালক/ যুগ্ম-পরিচালক এবং সাংগঠনিক কাঠামোতে তাঁরা সভাপতি/সহ-সভাপতি। একইভাবে সংগঠক ও যুগ্ম-সংগঠকের সাংগঠনিক কাঠামোগত অবস্থান ও পরিচিতি হবে সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।
গ. ক্ষমতা ও দায়িত্ব ঃ সংগঠন পরিচালনার সকল ক্ষমতা ও দায়িত্ব কার্র্যনির্বাহী পরিষদের উপর ন্যস্ত থাকবে। যদি গঠনতন্ত্রে বর্ণিত কোন বিষয়ে ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় অথবা এমন কোন জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হয়, যে বিষয় সম্বন্ধে গঠনতন্ত্রে সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই, তাহলে কার্র্যনির্বাহী পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। কার্র্যনির্বাহী পরিষদ বাজেট অনুমোদন করবে এবং বার্ষিক বাজেট প্রতিবেদন ও আয়-ব্যয় হিসাব সাধারণ সভার অনুমোদনের জন্য চূড়ান্ত করবে। ব্যয় নির্বাহ করবেন পরিচালক/ যুগ্ম-পরিচালক এবং কোষাধ্যক্ষ/ যুগ্ম-কোষাধ্যক্ষ যৌথভাবে। তবে প্রয়োজনে ছোট এবং জরুরি ব্যয় নির্বাহ করবেন পরিচালক।
ঘ. সভা আহ্বান ও কোরাম ঃ পরিচালক বা তাঁর সম্মতিতে সংগঠক কার্র্যনির্বাহী পরিষদের সভা আহ্বান করবেন। সাধারণত এক সপ্তাহের নোটিশে সভা আহ্বান করা হবে, তবে প্রয়োজনবোধে স্বল্পসময়ের নোটিশে সভা আহ্বান করা যাবে। এক চতুর্থাংশ সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হবে। মুলতবি সভার জন্য কোরাম প্রয়োজন হবে না।
ঙ. তলবি সভা ঃ ছয় মাসের মধ্যে কার্র্যনির্বাহী পরিষদের কোন সভা আহ্বান করা না হলে, পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য লিখিতভাবে পরিচালকের নিকট সভা আহ্বানের দাবি জানাতে পারবেন। দাবি জানানোর ত্রিশ দিনের মধ্যে সভা অনুষ্ঠিত না হলে, দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মিলিত স্বাক্ষরে তলবি সভা আহ্বান করা যেতে পারে। তলবি সভার নোটিশে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের স্বাক্ষর থাকতে হবে এবং দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে তলবি সভার কোরাম হবে।
চ. নীতিমালা ও বিধিমালা প্রণয়ন ঃ মেলার আদর্শ ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য অথবা মেলার কার্য পরিচালনার জন্য কার্র্যনির্বাহী পরিষদ গঠনতন্ত্রের আওতায় নীতিমালা এবং বিধিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে। পরিষদ উক্তরূপে প্রণীত নীতিমালা ও বিধিমালার সংশোধন. পরিবর্তন. পরিবর্ধন বা রহিত করতে পারবে।
ছ. সভার সভাপতিত্ব ঃ কার্র্যনির্বাহী পরিষদের সভায় পরিচালক, যুগ্ম-পরিচালক বা পরিষদের যে কোন প্রবীন সদস্য সভাপতিত্ব করবেন। সভার সভাপতির নিজস্ব ভোট থাকবে। উপরন্তু কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নির্ণয়ের লক্ষ্যে প্রয়োজন হলে তিনি তার কাস্টিং ভোটও প্রয়োগ করতে পারবেন।
জ. পদশূন্যতা ঃ (১) কার্র্যনির্বাহী পরিষদের প্রবীন সদস্যের পদ শূন্য হলে সাধারণ পরিষদের প্রবীন সদস্যদের মধ্য থেকে কো-অপ্ট কারা যাবে। অনুরূপভাবে তরুন সদস্য এবং শিশু সদস্য ক্ষেত্রমতে কো-অপ্ট করা যাবে। কো-অপ্ট করা সদস্য পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবেন। (২) কোন কারণে পরিচালকের পদ শূন্য হলে, একজন যুগ্ম-পরিচালক পরিচালকের পদে কার্যনির্বাহী পরিষদ কর্তৃক নির্বাচিত হবেন; এমতাবস্থায় অথবা কোন কারণে যুগ্মœ-পরিচালকের পদ শূন্য হলে, পরিষদের প্রবীন সদস্যদের মধ্য থেকে যুগ্ম-পরিচালক হিসাবে পরিষদ কর্তৃক নির্বাচিত হবেন। (৩) কোষাধ্যক্ষের পদশূন্য হলে যুগ্মœ-কোষাধ্যক্ষ কোষাধ্যক্ষের পদে অসীন হবেন; এমতাবস্থায় অথবা কোন কারণে যুগ্ম-কোষাধ্যক্ষের পদ শূন্য হলে পরিষদের প্রবীন সদস্যদের মধ্য থেকে একজন যুগ্মœ-কোষাধ্যক্ষ হিসাবে পরিষদ কর্তৃক নির্বাচিত হবেন। (৪) যে কোন পদ শূন্য হলে কো-অপ্ট করে কার্র্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য সংখ্যা পূর্ণ করার ধারাবাহিকতায় শূন্য পদ পূরণ করা যাবে।
ঝ. সাময়িক অনুপস্থিতি ঃ পরিচালকের সাময়িক অনুপস্থিতিতে একজন যুগ্মœ-পরিচালক এবং কোষাধ্যক্ষের সাময়িক অনুপস্থিতিতে যুগ্ম-কোষাধ্যক্ষ যথাক্রমে পরিচালক ও কোষাধ্যক্ষের সাময়িক দায়িত্ব পালন করবেন
ঞ. নির্বাহীদের দায়িত্ব ঃ (১) পরিচালক (সভাপতি) মেলার প্রধান নির্বাহী। বিভিন্ন পরিষদ উপ- পরিষদের মধ্যে যোগাযোগ ও সমন্বয় সাধন তিনিই করবেন। মেলার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের এবং সাধারণ পরিষদ/ কার্যনির্বাহী পরিষদের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের সর্বাধিক দায়িত্ব তার উপর ন্যস্ত থাকবে। তিনি সকল সদস্যের সহায়তায় এই দায়িত্ব পালন করবেন। যুগ্মœ-পরিচালক পরিচালককে কার্য পরিচালনায় সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদান করবেন। (২) কোষাধ্যক্ষ মেলার সকল সদস্যের বার্ষিক চাঁদা, অনুদান ইত্যাদি উপযুক্ত প্রাপ্তি রশিদের মাধ্যমে আদায় করবেন এবং সকল প্রকার হিসাব সংরক্ষণ করবেন। তিনি বার্র্ষিক আয়-ব্যয় হিসাব এবং পরবর্তী বছরের বাজেট প্রনয়ণ করবেন এবং কার্যনির্বাহী পরিষদ ও সাধারণ পরিষদে পেশ করবেন। কোষাধ্যক্ষ চাঁদা সংগ্রহের সুবিধার্থে মেলার সকল সদস্যের একটি সমকালীন তালিকা সংরক্ষন করবেন। যুগ্মœ-কোষধ্যক্ষ কোষাধ্যক্ষকে কার্য পরিচালনায় সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদান করবেন। (৩) সংগঠক (সাধারণ সম্পাদক) নির্বাহী সদস্যদের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করবেন এবং কার্যনির্বাহী পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরিচালকের নির্দেশে কার্য পরিচালনা করবেন, নির্বাহী পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত বার্ষিক প্রতিবেদন বার্ষিক সাধারণ সভায় পেশ করবেন এবং শিশু সদস্যদের পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করবেন। যুগ্ম-সংগঠক, সংগঠককে সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদান করবেন। (৪) আহ্বায়ক শিশু সদস্যদের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করবে এবং পরিচালক ও সংগঠকের নির্দেশে কাজ করবে। যুগ্মœ-আহ্বায়ক আহ্বায়ককে সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদান করবে। (৫) দপ্তর উপদেষ্টার নির্দেশে দপ্তর সহযোগী ও দপ্তর কর্মী মেলার দপ্তর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে, নথি সংরক্ষন করবে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে এবং জনসংযোগ সক্রিয় রাখবে।
ট. সভায় অনুপস্থিতি ঃ কার্যনির্বাহী পরিষদের কোন সদস্য পর পর তিনটি সভায় অনুমতি ব্যতিরেকে অনুপস্থিত থাকলে, দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতিক্রমে তাঁর পরিষদ-সদস্যপদ বাতিল করা যাবে। তবে সদস্যপদ বাতিলের পূর্বে অনুপস্থিতির কারণ বিবেচনা করা বাঞ্ছনীয়।
১০. উপ-পরিষদ ঃ
ক) স্থায়ী উপ-পরিষদ : সংগঠনের কার্য পরিচালনার সুবিধার্থে এবং কার্যনির্বাহী পরিষদকে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে নির্বাহী পরিষদ একটি স্থায়ী উপ-কমিটি গঠন করবে। উপ-পরিষদের সদস্য সংখ্যা হবে পনের। প্রয়োজনে নির্বাহী পরিষদ এই সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারবে। উপ-পরিষদে একজন সমন্বয়ক এবং একাধিক যুগ্ম-সমন্বয়ক মনোনীত করবে নির্বাহী পরিষদ। নির্বাহী পরিষদ উপ-পরিষদের কার্যাবলী প্রণয়ন করবে। তবে পরিচালক ও সংগঠক উপ-পরিষদকে দায়িত্ব প্রদান করতে পারবে। প্রয়োজনে নির্বাহী পরিষদের সাথে উপ-পরিষদের যৌথসভার আয়োজন করা যেতে পারে।
খ) অস্থায়ী উপ-পরিষদ : প্রয়োজনবোধে নির্দিষ্ট কাজের এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অস্থায়ী ও সাময়িক উপ-পরিষদ গঠন করা যাবে। নির্বাহী পরিষদ এটি গঠন করবে। নির্দিষ্ট কর্ম সমাপ্তিতে এবং নির্দিষ্ট সময়ান্তে অস্থায়ী উপ-পরিষদ বিলুপ্ত হবে।
১১. মেলার শাখা গঠন ও নামকরণ ঃ
ক) কচি-কাঁচার মেলার উদ্দেশ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা দেশের যে কোন স্থানে মেলার শাখা গঠন ও পরিচালনা করা যাবে। এ উদ্দেশ্যে নূন্যপক্ষে ৪০জন শিশু (কর্মী), তরুন (সহযোগী) এবং প্রবীন (উপদেষ্টা) সদস্য নিয়ে শাখা-মেলা গঠন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
খ) প্রত্যেক শাখা-মেলার সাথে “কচি-কাঁচার মেলা” কথাগুলো যুক্ত থাকতে হবে। সেই সঙ্গে স্থানের নাম এবং উপযুক্ত বিশেষণ যুক্ত থাকবে। যেমন- কুষ্টিয়া জয়যাত্রা কচি-কাঁচার মেলা, স্বরূপকাঠি সোপান কচি-কাঁচার মেলা, গোপালগঞ্জ মধুমতি কচি-কাঁচার মেলা।
১২. শাখা মেলা পরিচালনা ঃ
ক) এই গঠনতন্ত্রের আওতায় শাখা মেলা পরিচালিত হবে। তবে শাখা মেলার সংগঠনে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে ঃ
১. শাখা মেলার শিশু (কর্মী) পরিষদ, তরুন (সহযোগী) পরিষদ ও প্রবীন (উপদেষ্টা) পরিষদ এবং সম্মিলিতভাবে কার্যনির্বাহী পরিষদ থাকবে। তবে এসবের সদস্য সংখ্যা শাখা মেলার সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কম বেশী হতে পারবে।
২. শাখা মেলার সাধারণ পরিষদ সংশ্লিষ্ট সদস্যদের ভর্তি ফি ও চাঁদার হার নির্ধারণ করবে, যা শাখা ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
৩. শাখা মেলার সাধারণ পরিষদের প্রবীন (উপদেষ্টা) সদস্যবৃন্দ স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্য থেকে হবেন। সকল সদস্য স্থানীয়ভাবে সুনামের অধিকারী হবেন। শিশু (কর্মী) ও তরুন (সহযোগী) সদস্যের যোগ্যতা এই গঠনতন্ত্রের ধারা ৫.২ (ক) এবং (খ) মোতাবেক হবে।
১৩. শাখা মেলার স্বীকৃতি ও শৃঙ্খলা ঃ
ক) শাখা মেলা গঠনের পর কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতিসহ স্বীকৃতির জন্য কেন্দ্রীয় মেলার পরিচালকের নিকট লিখিতভাবে আবেদন করতে হবে।
খ) কেন্দ্রীয় মেলা আবদেনকারী শাখা মেলার কার্যাবলী পর্যবেক্ষণ করবে এবং শাখা মেলার কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্যদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেবে।
গ) শাখা মেলার নির্বাহী ও কার্যাবলী সম্বন্ধে সন্তুষ্ট হয়ে কেন্দ্রীয় মেলা শাখা মেলাকে স্বীকৃতি প্রদান করবে।
ঘ) শাখা মেলার কার্যনির্বাহী পরিষদের যে কোন সদস্যের আচরণ/সুনাম গ্রহণযোগ্য প্রতীয়মান না হলে, কেন্দ্রীয় মেলা উক্ত রূপ সদস্য/সদস্যদের প্রত্যাহারের পরামর্শ দিবে। এই পরামর্শের বিষয়ে শাখা আপীল করলে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ পুনঃবিবেচনার পর যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত পালনে অকৃতকার্য হলে, উক্ত শাখার স্বীকৃতি স্থগিত বা বাতিল করা যাবে। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ এই ক্ষমতা প্রয়োগ করবে।
১৪. আঞ্চলিক সমন্বয় ঃ
ক) একই অঞ্চলে কাছাকাছি অবস্থিত অন্যূন পাঁচটি শাখা মেলা একত্রিত হয়ে একটি আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করতে পারবে।
খ) আঞ্চলিক পরিষদ সংশ্লিষ্ট শাখা মেলা সমুহের মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে এবং সম্মিলিতভাবে একক কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে পারবে।
গ) অংশগ্রহণকারী প্রতিটি শাখা মেলা থেকে ন্যূনপক্ষে একজন, উর্ধ্বপক্ষে তিনজন সদস্য নিয়ে আঞ্চলিক সমন্বয় পরিষদ গঠিত হবে। প্রয়োজনে অধিক সদস্য কো-অপ্ট করা যাবে।
ঘ) কেন্দ্রীয় মেলা ও শাখা মেলার মধ্যে এই পরিষদ কোনরূপ মধ্যবর্তী স্তররূপে বিবেচিত হবে না, বরং নিকটবর্তী শাখাসমূহের একত্রিত ও সমন্বিতভাবে কাজ করার উপযোগী প্রক্রিয়া হিসাবে বিবেচিত হবে।
ঙ) আঞ্চলিক সমন্বয় পরিষদের নির্দিষ্ট সময়কাল থাকবে না। অংশগ্রহণকারী শাখা মেলাসমূহ তাদের প্রয়োজন ও ইচ্ছা অনুসারে আঞ্চলিক সমন্বয় পরিষদ গঠন, পুনর্গঠন, স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে।
চ) আঞ্চলিক সমন্বয় পরিষদের একজন সমন্বয়ক ও এক বা একাধিক যুগ্ম-সমন্বয়ক থাকবেন।
১৫. আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক ঃ জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত শিশু নীতিমালা বাস্তবায়নকল্পে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এবং আর্ন্তজাতিক শিশু সংগঠন/সংস্থার সাথে কচি-কাঁচার মেলা কার্যকরী সহযোগিতা গড়ে তুলবে এবং যৌথ কর্ম প্রয়াস গ্রহণ করবে। বাঙ্গালী বা স্থানীয়দের উদ্যোগে বিদেশে কচি-কাঁচার মেলার শাখা গঠন করা হলে, কেন্দ্রীয় মেলা নির্দেশনা উপদেশনা ও স্বীকৃতি প্রদান করতে পারবে।
১৬. ট্রাষ্টি বোর্ড ঃ মেলার সাধারণ পরিষদ পনের সদস্য বিশিষ্ট একটি ট্রাষ্ট্রি বোর্ড গঠন করবে। মেলার প্রবীন সদস্যদের মধ্য থেকে এবং মেলার সদস্য নন এমন সৎ অনুকরনীয় চরিত্রের বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্য থেকে ট্রাষ্টি মনোনীত হবেন। পরিচালক পদাধিকার বলে ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য হবেন।
ক) লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : ট্রাষ্টি বোর্ড গঠণের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো দেশের দায়িত্বশীল, নির্ভরযোগ্য, বিশিষ্ট নাগরিকদের দ্বারা শিশু সংগঠনটিকে অভিভাবকত্ব প্রদান, কোন প্রকার চক্রান্ত বা আঘাত থেকে সুরক্ষা প্রদান, মেলার অর্থ-সম্পদ রক্ষা ও সর্বোচ্চ সদ্ব্যাবহার নিশ্চিত করা এবং সর্বোপরি শিশু-তরুনদের উৎসাহ প্রদান ও পরিচালনা পরিষদকে উপদেশনা প্রদান। ট্রাষ্টি বোর্ডের সঙ্গে মেলার সর্ম্পক হবে পিতা-মাতা ও সন্তানের মত।
খ) গঠন ও মেয়াদ : মেলার বার্ষিক বা বিশেষ সাধারণ সভায় ছয় বছর মেয়াদের জন্য ট্রাষ্টি বোর্ড গঠিত হবে। বোর্ডের প্রথম সভায় ট্রাষ্টিবৃন্দ নিজেদের মধ্য থেকে একজনকে সভাপতি নির্বাচিত করবেন। পদত্যাগ বা কোন কারণে মেয়াদকালের মধ্যে ট্রাষ্টিপদ শূন্য হলে, ট্্রাষ্টিবোর্ড ও নির্বাহী পরিষদের যৌথ সভায় শূন্যপদে কো-অপ্ট করা যাবে এবং কো-অপ্টকৃত ট্রাষ্টি, বোর্ডের মেয়াদকাল পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত ট্রাষ্টি থাকবেন। মেয়াদ অন্তে ট্রাষ্টিগণ পূণরায় নির্বাচিত হবার যোগ্য হবেন। কোন কারণে ছয় বছর মেয়াদান্তে নতুন ট্রাষ্টিবোর্ড মনোনীত না হলে, বর্তমান (বীরংঃরহম) ট্রাষ্টি বোর্ড নতুন ট্রাষ্টিবোর্ড মনোনীত না হওয়া পর্যন্ত বৈধ থাকবে এবং কাজ চালিয়ে যাবে।
গ) পরিচালনা : প্রয়োজন অনুযায়ী ট্রাষ্টিবোর্ড সভায় মিলিত হবেন। সভাপতির সাথে পরামর্শক্রমে মেলার পরিচালক সভা আহবান করবেন। ট্রাষ্টের সভাপতি সভায় সভাপতিত্ব করবেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে উপস্থিত সদস্যবৃন্দ ঐ সভার সভাপতি নির্বাচন করবেন। এক তৃতীয়াংশ ট্টাষ্টির উপস্থিতিতে সভার কোরাম হবে। মুলতবি সভার জন্য কোরাম প্রয়োজন হবে না। সদস্য নন এমন ট্রাষ্টিগণ আমন্ত্রনক্রমে সাধারণ সভায় উপস্থিত থাকবেন। মেলার সংগঠক ট্রাষ্টিবোর্ডের সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন এবং সর্বপ্রকার সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবেন। ট্রাষ্টি-বোর্ডের কার্যপরিচালনার জন্য কার্যনির্বাহী পরিষদ এবং ট্রাষ্টিবোর্ডের যৌথ সভা নীতিমালা ও বিধিবিধান প্রণয়ন করবে।
ঘ) কার্যক্রম :
১. মেলার আয়-ব্যয় হিসাব পর্যালোচনা করা, আয় বৃদ্ধি এবং ব্যয়ের ন্যায্যতা নিশ্চিত করা, বার্ষিক হিসাব পরীক্ষা করা, হিসাব বিষয়ে পরামর্শ প্রদান।
২. মেলার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির উপযুক্ত ব্যবহারে নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান। জমিক্রয়, লীজ গ্রহণ বা বড় ধরণের নির্মাণকাজে নির্বাহী পরিষদ ট্রাষ্টিবোর্ডের পূর্ব-অনুমোদন গ্রহণ করবে। একইভাবে ট্রাষ্টিবোর্ডের অনুমোদন ব্যতিরেকে মেলার জমি বা জমির ওপর ষ্ট্রাকচার বিক্রয় করা বা লীজ দেয়া যাবে না।
৩. যে কোন ট্রাষ্টি স্ব-উদ্যোগে যে কোন সময় মেলা পরিদর্শন করতে পারবেন, কোন বিষয়ে খুটিনাটি জানতে চাইতে পারবেন, পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারবেন।
৪. মেলার তহবিল গঠনে সহায়তা দেবেন। উন্নয়ন কাজে স্পন্সর সংগ্রহে অবদান রাখবেন। বৈদেশিক সহায়তা অর্জনে সচেষ্ট হবেন।
৫. মেলার প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও অনুষ্ঠানাদিতে যোগদান করে উৎসাহ প্রদান করবেন।
৬. প্রয়োজন ও সুযোগ অনুযায়ী নির্বাহী পরিষদের সাথে যৌথ সভার আয়োজন করে কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হবেন এবং পরামর্শ প্রদান করবেন।
৭. শিশু-কিশোরদের কল্যানার্থে বিশেষ করে মেলার সদস্যদের কল্যানার্থে কল্যান-ফান্ড বা ট্রাষ্টি-ফান্ড গঠন করা হলে, ট্রাষ্টিবোর্ড উক্ত তহবিল সর্বোপরি তত্ত্বাবধান করবেন।
১৭. গঠনতন্ত্র সংশোধন ঃ
ক. গঠনতন্ত্রের সংশোধন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন বা বিয়োজন কেন্দ্রীয় মেলার সাধারণ পরিষদের বার্ষিক বা বিশেষ সাধারণ সভায় উপস্থিত সদস্য সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে নির্ধারিত হবে।
খ. জরুরি প্রয়োজনে বা বিশেষ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় মেলার কার্যনির্বাহী পরিষদের মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন তিন-চতুর্থাংশ সদস্যের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে গঠনতন্ত্রের সংশোধন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন বা বিয়োজন করা যাবে। তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ সংশোধন পরবর্তী সাধারণ সভায় উপস্থাপন করতে হবে।
1 Comments
আমি কি সদস্য হতে পারি
ReplyDelete