Header Ads Widget

Responsive Advertisement

Ticker

6/recent/ticker-posts

আন্তঃমেলা চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা


                                                                         আদিব কিবরিয়া

কচি-কাঁচার মেলা একটি শিশু-কিশোর সংগঠন। যার হাত ধরে এ প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল, তিনি হলেন বিশিষ্ট শিশু-সাহিত্যিক সংগঠক রোকনুজ্জামান খান। আমাদের প্রিয় দাদাভাই। দাদাভাইয়ের আন্তরিক চেষ্টায় এই শিশু-কিশোর সংগঠনটি অল্পদিনে নামকরা প্রতিষ্ঠান হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। সারাদেশে গড়ে ওঠে কয়েক শত শাখা সংগঠন। কচি-কাঁচার মেলা প্রতিবছর আন্তঃমেলা চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এই দেশে চিত্রাঙ্কন বা ছবি আঁকার পিছনে যে মানুষের অবদান উল্লেখযোগ্যÑতিনি হলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন। তিনি অত্যন্ত যতœ করে এঁকেছিলেন দুর্ভিক্ষের চিত্র। কচি-কাঁচার মেলা সম্ভবত ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম এক চিত্রকলা প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল। 

সেই আয়োজনে চিত্রকলার বিষয় ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যা। এই প্রদর্শনীয় কিছুদিন পর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তিনি সরকারি উদ্যোগে লন্ডনে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার সময় সংগৃহীত শিশুদের আঁকা ছবি থেকে ৭০ টা ছবি সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়Ñলন্ডনে কমনওয়েলথ ইনষ্টিটিউটের ডিরেক্টর ছবিগুলো দেখে নিজেদের ব্যবস্থাপনা ও খরচে ছবির প্রদর্শনী করেন।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, কবি জসীমউদ্দীন ও বিজ্ঞানী ড. আবদুল্লাহ আল-মুতি শরফুদ্দিন কচি-কাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম। তাই প্রতিবছর কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা জয়নুল-জসীম-আল-মুতী জন্মোৎসব উপলক্ষ্যে দুইদিনব্যাপী আবৃত্তি, বিজ্ঞানমেলা এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এ উপলক্ষ্যে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় ও শাখামেলার ভাই-বোনদের আঁকা ছবি নিয়ে আন্তঃমেলা চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এবার ৬০-৭০ টি শাখা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। বয়সভিত্তিক তিনটি শাখায় ৬০০-৭০০ প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। আন্তঃমেলা চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ভাই-বোনদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, মেধা, পুরস্কার ১ম, ২য় ও ৩য় প্রদান করা হয়।

এবারে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলোÑ ‘ক’ শাখায় শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছে ফারমিহা আহমেদ শ্রেষ্ঠা। মেধা ১ম পুরস্কারÑ জিহাদুল আলম পবন। ২য় পুরস্কারÑ মানফাত এনায়েত (প্রাচুর্য)। ৩য় পুরস্কারÑ বিবেক রায়। ‘খ’ শাখায় শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছে মাহমুদা খাতুন (মিম)। মেধা ১ম পুরস্কারÑ মাহদিয়াত আদিবাহ। ২য় পুরস্কারÑ তাহিয়া তাহসিন আফসা। ৩য় পুরস্কারÑ উম্মে হাফসা (নিম্মি)। ‘গ’ শাখায় শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছে হাসনাত জোহা সৌহার্দ্য। মেধা ১ম পুরস্কারÑ নিশাত তাসনিম তানিশা। ২য় পুরস্কার পেয়েছে আফরোজা রহমান মুমু। ৩য় পুরস্কার অর্জন করে জান্নাতুল মাওয়া জেরিন।

নির্বাচিত ছবিগুলি কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার ক্যালেন্ডারে ছাপানোর জন্য দেওয়া হয়। জয়নুল-জসীম-আলমুতী জন্মোৎসবের অনুষ্ঠানে এদের পুরস্কৃত করা হয়। ২০১১ সালের ১৬ মে মেলার আঁকা ছবি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন নরওয়ের রাষ্ট্রদুত রাঙ্গনে বিরতে লুন্ড। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আঁকা শিল্পকর্ম আমাদের অনুপ্রাণিত করে। তিনি কচি-কাঁচার শিল্প বিতান (ছবিআঁকার ক্লাস) প্রতিষ্ঠা করেন মেধা বিকাশে আন্তঃমেলা চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা কচি-কাঁচাদের এ উৎসবে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা আন্তঃমেলা চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। কচি-কাঁচার মেলার গৌরবোজ্জ্বল ৬১ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আমাদের কচি-কাঁচাদের ছবির প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। জয়নুল-জসীম-আলমুতীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখি।

Post a Comment

0 Comments

যে দোয়া পড়া সুন্নত কঠিন বিপদ থেকে বাঁচতে