Header Ads Widget

Responsive Advertisement

Ticker

6/recent/ticker-posts

সভাপতির কথা


বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিকদিয়ে অনেক উন্নতি করেছেÑতবে নৈতিক অবনতি আমাদের চিন্তিত করেছে। অর্থনৈতিক উন্নতি চোখে পড়ার মত। দেশে দুর্ভিক্ষ হয় না। এমন কি মঙ্গা পর্যন্ত পালিয়েছে বাংলাদেশ থেকে। গ্রামে গঞ্জে সবার পরনে ভালো কাপড়-চোপড়। আগে পল্লী এলাকায় কুঁড়েঘর ছিল অনেক, টিনের ঘর কম, পাকাঘর খুবই কম। এখন পল্লী এলাকায় প্রবাসী বাঙালীদের অর্থায়নে গড়ে উঠেছে দালান কোঠা, এমন কি বহুতলবিশিষ্ট দালান। কুঁড়ে ঘর খুঁজে পাওয়াই দায়। বোধকরি শিগগিরই কুঁড়েঘরের ঠাঁই মিলবে মিউজিয়ামে। গ্রামে-গঞ্জে নয়। এমন উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যেতে বসেছে নৈতিকতা, মানবিকতা তথা সভ্যতা। তবে দোষ উন্ননের নয়। দোষ আমাদের।
বাঙালি অভাবের যুগে সভ্যজাতি হিসেবে পরিচিত ছিল। পেটে ভাত ছিল না। মনে ভালোবাসা ছিল। বুকে সাহস ছিল। বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ানোই ছিল বাঙালির স্বভাব। গাছের একটি ডাব পেড়ে হলেও দরিদ্রজন আতিথেয়তা করতো। কিন্ত আজ টাকা-পয়সা মানুষকে দুর্নীতিতে উৎসাহ দিচ্ছে, আরও পাবার মোহে আচ্ছন্ন করছে। দুর্বলের প্রতি সহানুভূতির বদলে হয়রানি করার প্রবণতা বাড়ছে। কাঙালের ধন চুরি করছে, আছে যার ভুরিভুরি।
সভ্যতা-ভব্যতা উঠে যাচ্ছে। শিক্ষক হলেন পিতার মত। মাথা হেট হয়ে যায় যখন সংবাদপত্রে পড়ি এক মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক তাঁর ছাত্রীদের সম্ভ্রম নষ্ট করেছেন। প্রধান শিক্ষকের পাইক-পেয়াদারা ছাত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে হত্যা করেছে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা হত্যায় সহযোগিতা করেছেন। স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অনেকে প্রধান শিক্ষকের পক্ষ নিয়েছেন। এমন কি তাঁর পক্ষে আন্দোলন করেছেন। ..... এ কোন সমাজ? আমরা কি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই সমাজ চেয়েছিলাম? ৩০ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে কি এমন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য। বঙ্গবন্ধু কি এমন সমাজ চেয়েছিলন, যে সমাজে লম্পট-দুর্নীতিবাজেরা শান্তিপ্রিয় মানুষের ওপর ছড়ি ঘোরাবে? না। সেজন্যেই তো বঙ্গবন্ধুকে মারা হলো, হত্যা করা হলো মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল, তাজউদ্দিন, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং কামরুজ্জামানকে। নৈতিক নেতাদের হত্যা করে অনৈতিক ভ-দের বানানো হয়েছে সমাজপতি।
ছোট বন্ধুরা, কচি-কাঁচার মেলার সকল সদস্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ^াসী। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ^াসী। মানবিকতায় বিশ^াসী। নৈতিকতায় বিশ^াসী। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ আদর্শিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। বিজয়ের পর আদর্শিক মানুষকে হত্যার মধ্য দিয়ে ‘আইয়ামে জাহেলিয়্যাত’ কায়েম হয়েছে।
ছোট বন্ধুরা, তোমাদের মধ্যে স্বর্গীয় গুণাবলি বিদ্যমান। ধনসম্পদ তোমাদের কলুষিত করেনি। মেলা তোমাদের শিখিয়েছে মানুষকে ভালবাসতে, দেশকে ভালবাসতে, মাতৃভাষাকে ভালবাসতে। এ সব থেকে তোমরা কেউ পথচ্যুত হবে না। তোমাদের উপর নির্ভর করছে একটি সুন্দর মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। তোমরা কখনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবে না, ভয় পাবে না। আমাদের নবীজি (দ:) বলেছেন, ‘তোমরা অন্যায়কে প্রতিরোধ করো, যদি না পার তবে প্রতিবাদ করো, তাও যদি না পার, তা হলে অন্তত অন্যায়কে ঘৃণা কর।’ এটাই নৈতিকতা, এটাই মানবিকতা।
আশাকরি, আজকের শিশু-কিশোরদের মধ্যেই পুনর্জীবিত হয়ে উঠবে মুক্তযুদ্ধে আত্মদানকারীদের সাহসিকতা ও মানবিকতা।

Post a Comment

0 Comments

যে দোয়া পড়া সুন্নত কঠিন বিপদ থেকে বাঁচতে