রবিউল হুসাইন
সুবজ পাহাড় ওই দিগন্তের গা ছুঁয়ে
একজন বটের গাছ দাঁড়িয়ে বাতাসের হাত ধরে
মানুষের হৃদয়ের আকার নিয়ে শত শত সবুজ পাতা
হাজার হাজার সবুজ পতাকা নাকি শিশুদের
লক্ষ লক্ষ সবুজ সজীব হাতছানি-
এই দীণক্লিষ্ট মায়াবী ভূমির প্রতি অভয়মুদ্রা
পাখিদের রজতজন্তীতে হরিয়াল, টিয়া আর
কাঠবেড়ালী অনন্ত মিছিলে বলেছিলো
এদেশের দুস্থ সুন্দরের কথা
মেঘের জলকণায় ভিজে যায় বৃষ্টির কথাকলি
সেখানে বয়ে যায় রোদ্দুরের প্রবল সাহস
মাটির গভীরে প্রোথিত শেকড়ের সঙ্গে
পোকা-মাকড়ের কতো কতো গোপন বৈঠক
জলস্রোত জমে থাকে উর্ববরতার প্রাণময় বীজ
বাস্তুসাপ ঘুমিয়ে আছে নিশ্চিন্তে মাটির বাসায়
সন্ন্যাসীর ত্রিশূলে বসে একটি টিটিভ পাখি
একদিকে মাজারের লাল সালু ঘিরে ভক্তের জিকির
শোনা যায় সন্ধার আজান, শঙ্খ আর ঘন্টার দ্যুতিময় ধ্বনি
মাটির বেদীর ওপর শুয়ে আছে ক্লান্ত পথিক
বাছুর আর ছাগল ছানা খেলা করে শালিকের সঙ্গে
বটের ঝুড়ি থেকে দোলনার দুলুনিতে চরচর ঘোরে
রাখালের লাঠিটি পড়ে আছে, একপাশের পিপড়ের সারি
সবুজ ঘাসের ভেতর মাথা উঁচিয়ে কেঁচোদের গোল গোল বাড়ি
শাড়ি পরা ছোট্ট খুকিটি দৌড়ে যায় প্রজাপতির দিকে
নর-নারী হেসে ওঠে সমুদ্রের সুগন্ধী হাওয়ার
বটবৃক্ষ জানে এই সব ধ্র“পদী সম্পন্ন ছবির জন্ম ইতিহাস
দু’হাতে আগলিয়ে নিয়ে প্রাণের অভ্যন্তরে রাখা আছে
উজ্জ্বল জাদুঘরে কতোশত দুঃখ, বেদনা, বঞ্চনা, অপমান, সংগ্রাম
শোক, ত্যাগ, উৎসর্গ, ব্যর্থতা আর সাফল্যের আন্দোলন কাল
এইসব নিয়ে সর্বংসহা একালের বটবৃক্ষ ত্রিকালদর্শী বেগম সুফিয়া কামাল।
0 Comments